ইসলামের সৌন্দর্যময় আনুষ্ঠানিকতা অন্য সকল ধর্মের উপর শ্রেষ্ঠ

নিরানব্বইটি নামে গুণান্বিত সেই মহান আল্লাহ নিজে সুন্দর, তাই তিনি সুন্দরকে ভালবাসেন। বস্তুগত ও অবস্তুগত যত সৃষ্টি আছে, সেই সৃষ্টির মধ্যে কোন ত্রুটি নাই, নাই কোন অসংগতি। আকাশ ও যমিনের সকল সৃষ্টির সৌন্দর্য তো বর্ণনা করে শেষ করা যাবে না।

ইসলামের সৌন্দর্যময় আনুষ্ঠানিকতা অন্য সকল ধর্মের উপর শ্রেষ্ঠ

ইসলামের সৌন্দর্যময় আনুষ্ঠানিকতা অন্য সকল ধর্মের উপর শ্রেষ্ঠ


আল্লাহ বলেন- পৃথিবীর সমস্ত গাছকে যদি তোমরা কলম বানিয়ে সমুদ্রের পানিকে যদি কালি করে আমার সৃষ্টির সৌন্দর্য বর্ণনা কর তবুও শেষ হবার নয়। আমাদের অন্তরে লালিত বেহেস্তের সৌন্দর্য যতটুকু বর্ণনা করা হয়েছে তার চেয়েও অনেক বেশি আকর্ষণীয় ও কল্পনাতীত সৌন্দর্যের চমকে ভরপুর। 

আল্লাহর যত সৃষ্ট জীব আছে তার মধ্যে মানুষ সেরা। কারন মানুষকে দেয়া হয়েছে তার জীবন চক্রের বিধি-বিধান। যার মধ্যে সুন্দরের সব সমাবেশ ঘটেছে। সমগ্র মানব জাতির কাছে আমাদের প্রিয় নবীর উপর ‍আল কোরআন অবতীর্ণ করে মানুষের কার্যকলাপ ও চলাফেরার আনুষ্ঠানিকতা সুন্দরভাবে বিশদ বর্ণনা করা হয়েছে।

এই সকল সৌন্দর্যময় আনুষ্ঠানিকতা ইসলামকে অন্য সকল ধর্মের উপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছে। সৌন্দর্যের বিচারে কোন ধর্মই ইসলামের পাশে এসে দাঁড়াবার যোগ্যতা রাখেনা। আর ইসলামই আল্লাহর নিকট গ্রহণযোগ্য একমাত্র ধর্ম। মানুষের বাহ্যিক ইবাদতের মধ্যে সর্বাধিক দৃশ্যমান ইবাদত হচ্ছে নামাজ। নামাজের প্রত্যেকটি আনুষ্ঠানিকতায় সৌন্দর্য ফুটে উঠে।

সৌন্দর্যময় বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতা


অযুর সৌন্দর্য ও বাস্তবতা : নামাজে সমবেত হওয়ার আগে ধারাবাহিকভাবে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ধুয়ে পরিচ্ছন্ন হওয়ার যে বাধ্যবাধকতা তা বর্তমান করোনা কালীন বিশ্বে খুবই যৌক্তিক ও কার্যকরী একটা পদ্ধতি হিসাবে প্রমানিত হয়েছে। যা মুসলমানরা বহুদিন আগে থেকে পালন করে আসছে। এমন সুন্দর পদ্ধতি আর কোন ধর্মে দেখা যায় না।

আযানের সৌন্দর্য : প্রতিদিন মসজিদের ঐ মিনার থেকে মুয়াজ্জিনের সুমধুর কণ্ঠে আযানের যে ধ্বনি ভেসে আসে তা কতই না সুন্দর লাগে। মনে জাগে হাজার বছর আগে হযরত বেলাল ডাকত এমনি অনুরাগে। এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে আমরা মসজিদে প্রত্যেক দিন পাঁচবার সমবেত হই। এমন বিধান কি আর অন্য ধর্মে আছে ?

নামাজের সৌন্দর্য : একজন ইমামের নেতৃত্বে ধনী-গরীব, সাদা-কালো, উচু-নিচু, ভেদাভেদ ভুলে পাশাপাশি সারিবদ্ধ ভাবে দাড়িয়ে মধুর কণ্ঠে কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে নামাজ পড়ার যে দৃশ্য সত্যিই অতুলনীয়।

পৃথিবীর সকল মুসলিম কাবার দিকে মুখ করে দাঁড়িয়ে ইমামের নির্দেশে একইসাথে হাতের উপর হাত রেখে অবনত হয়ে গভীর মনে তেলাওয়াত শোনা, রুকু করা, সিজদা করার যে অপুর্ব দৃশ্য, তারপর বিশেষভাবে বসে দোয়া পড়ার পর আবার একই সাথে সালাম ফেরানোর দৃশ্য বাইরে থেকে দেখলে অবাক করার মতই সৌন্দর্য ফুটে উঠে।

শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্যই ফুটে উঠেনা এখানে এক স্বর্গীয় শান্তিময় আবেগ সৃষ্টি হয়। দুই হাত তুলে চোখের পানি ফেলে সৃষ্টিকর্তার কাছে মোনাজাত করার দৃশ্য যে কোন পাষাণ হৃদয়কে আকৃষ্ট করবে। লক্ষ জনতা এক ইমামের কমান্ডের সাথে সাথে নামাজ পড়ার দৃশ্য যেন সেনা বাহিনীর কুচকাওয়াজের মতই শৃঙ্খল।

এক সাথে একই নির্দেশ মানতে কারো মধ্যে কোনো দন্দ্ব, হিংসা-বিদ্বেষ বা দলাদলি নাই, নাই কোনো ক্ষমতা ও আভিজাত্যের প্রকাশ। এক আল্লাহর সামনে সবাই যেন আমরা সমান। কোন ধর্মে এমন শৃঙ্খলার উদাহরণ আছে কি?

নামাজের সময় : প্রতিদিন পাঁচবার নামাযের যে সময় নির্ধারণ করা হয়েছে সেটাও আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের সাথে খুবই মানানসই। সূর্য উঠার আগে একবার, দিনের কাজ শেষে দুপুরে একবার, বিশ্রামের পর বিকালে একবার, সূর্য অস্ত যাবার পর সন্ধ্যায় একবার এবং রাত্রে ঘুমানোর আগে আরও একবার। এভাবে মানুষকে সময়ের সাথে সাথে শৃঙ্খলার বন্ধনে আবদ্ধ করার যে রীতি তা অনন্য। অন্য ধর্মে প্রতিদিনের এমন নিয়মানুবর্তিতা খুঁজে পাওয়া যাবে না।

জুম্মার নামাজের সৌন্দর্য : শুক্রবারকে মুসলমানদের সাপ্তাহিক ঈদের দিন বলা হয়। প্রায় প্রত্যেক বাড়িতে সাধ্যমত ভাল খাবার রান্না করা হয়। সুন্দর পোষাকে আতর লাগিয়ে সকলে আমরা মসজিদে সমবেত হই। ইমাম একটা উঁচু আসনে দাঁড়িয়ে সমসাময়িক ও ধর্মীয় বিভিন্ন বিষয়ে বক্তব্য পেশ করেন। সবাই মন দিয়ে শোনেন এবং তা মেনে চলার চেষ্টা করেন। এখানে নেতা ও নেতৃত্বের বিষয়টি ফুটে উঠে। সমাজে এর সুবাতাস ছড়িয়ে পড়ে।

রমযান মাসের সৌন্দর্য : বছরের অন্যান্য মাস থেকে রমযান মাসে সম্পূর্ণ আলাদা পরিবেশ তৈরি হয়। নতুন চাঁদ দেখার যে আনন্দ সত্যি অদ্ভুত। শুরু হয় ঘরে ঘরে রোযার প্রস্তুতি। ছোট বড় নতুন নতুন মানুষ গায়ে সুগন্ধি লাগিয়ে পান্জাবী গায়ে মসজিদে গিয়ে তারাবির নামায পড়ার যে স্বর্গীয় আনন্দ সত্যি অতুলনীয়।

সেহরী খেয়ে সারাদিন কোন কিছু না খেয়ে বিভিন্ন কাজ ও ইবাদতের পর ইফতারের যে আনন্দ শুধু রোযাদাররাই বোঝে। এই মাসে মানুষের আচরণের পরিবর্তন, সামাজিক পরিবেশের পরিবর্তনসহ নানাবিধ সৌন্দর্য অন্য ধর্মের মানুষকে আকৃষ্ট করে।

ঈদের নামাজের সৌন্দর্য


রমযানের ঔ রোজার শেষে এল খুশির ঈদ। দীর্ঘ একমাস রোযা পালনের পর ঈদের মজাই আলাদা। সবচেয়ে বেশি আনন্দ হয় ছোট বেলায়। চারিদিকে খুশির আমেজ। গরীব ও অসহায় মানুষদেরকে দান করা, নতুন জামা কাপড় কেনা, হরেক রকমের রান্নার আয়োজন, নতুন পোষাকে সুগন্ধি মেখে দলে দলে ঈদগাহে যাওয়া, ইমামের বক্তব্য শোনা, নামাজ পড়া এবং শেষে হাতে হাত বুকে বুক ‍মিলিয়ে কোলাকুলি করার আনন্দের সাথে সাথে এক অতুলনীয় সৌন্দর্য ফুটে উঠে।

দ্বন্দ ভুলে গিয়ে সবাই সবার বাড়ি যাওয়া, বাইরে ঘুরতে যাওয়া, বিভিন্ন খেলাধুলা ও মেলার আয়োজন যে যার মত করে আনন্দ ভাগাভাগি করে নিচ্ছে। নেই কোন নাচ-গান, রং মাখামাখি আর উছৃঙ্খলতা সহ আপত্তিকর অনেক কিছু। আছে এক অনাবিল আনন্দে ভরা এক সৌন্দর্যের মাধুর্য।

ঈদুল ফিতরে একটা উল্লেখযোগ্য দিক হল এই ঈদে গরীব মানুষদের যাকাত দেয়া হয়। নিজের আয় পরিশুদ্ধ করা এবং বেশি নেকির আশায় এ মাসেই সকলে প্রায় যাকাত দিয়ে থাকে।  এটা এমন একটা ব্যবস্থা যার কারণে সমাজে ধনী ও গরীবের মধ্যে ব্যবধান কমে আসে। সমাজে শান্তিময় এক সৌন্দর্য ফুটে উঠে।

ঈদুল আযহা বা কোরবানীর ঈদে সামর্থবানরা গরু, ছাগল, উঠ, ভেড়া কুরবানী করে থাকে। মানুষের মনে ও আচরণে যে পশুত্ব তা পশু জবাইয়ের মধ্য দিয়ে আমরা সেটা ত্যাগ করার চেষ্ঠা করে থাকি। কুরবানির গোস্ত আত্মীয় স্বজন ও গরীব অসহায়দের মাঝে বিতরণ করা হয়। চামড়া বিক্রির টাকাও সম্পুর্ণ দরিদ্র মানুষদের দিয়ে দেয়া হয়।

ধর্মের প্রতি বাকে বাকে দুঃখী মানুষদের সাহায্য সহযোগিতা করার যে উদারতা তা অন্য ধর্মে দেখা যায় না। এভাবে ঈদের আনন্দ সমাজে সকলের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে। সমাজ সৌন্দর্যে ভরে উঠে।

কাবা ঘর ও হজের সৌন্দর্য


কাবা ঘরকে কেন্দ্র করে প্রতিবছর বিশ্বের সকল মুসলমানরা যে মহা সম্মেলন ‘হজ’ পালন করে থাকে তা এক অনন্য সৌন্দর্যে ভরে উঠে। রাজনৈতিক মতপার্থক্য, দেহের রং, ভাষার ভিন্নতা, ধনী-গরীবের ব্যবধান, ক্ষমতা ও আভিজাত্যের দম্ভ ভুলে গিয়ে একই পোষাকে এক আল্লাহর দরবারে উপস্থিত হয়ে ঐতিহ্যবাহী সুপ্রাচীন এই সম্মানিত কাবা ঘরকে কেন্দ্র করে সাতবার প্রদক্ষিণ করার যে অতুলনীয় সৌন্দর্য তা বিশ্বে অদ্বিতীয়।

হজের অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতার মধ্যেও সৌন্দর্যের যেন কোন কমতি নাই। এমন নিরাপদ নগরী আর কোথাও আছে কি? কোন জাতিই এমন নিরাপদ শহর গড়ে তুলতে পারেনি। বিশ্বব্যাপী এমন সুশৃঙ্খল লক্ষ লক্ষ মানুষের সমাবেশ অন্য কোন ধর্মের অনুসারীরা দেখাতে ব্যর্থ।

পৃথিবীর মধ্যখানে অবস্থিত প্রায় চার কোনা উঁচু এই ঘরটিকে প্রতিবছর হজ মওসুমে স্বর্ণ মিশ্রিত বিশেষ সুতা দিয়ে কোরআনের বাণী লেখা কাল কাপড়ের পোষাকে বা গিলাফে আবৃত করার যে অভূতপূর্ব আয়োজন তা আধুনিকতা, রুচিশীলতা ও সৌন্দর্যের এক ব্যাতিক্রমী উদাহরণ। এমন আয়োজন বিশ্বের কোন ধর্মীয় উপাসনালয়ে দেখা যায় না। নিঃসন্দেহে এই সব সৌন্দর্য মুসলমানদেরকে অনন্য করে রেখেছে।

এই দুনিয়াতে যত মসজিদ গড়ে উঠেছে সকল মসজিদই কাবা ঘরকে কেন্দ্র করে ‍নির্মিত হয়েছে। এমন সুশৃঙ্খলিত বিন্যাস আর কোন ধর্মে নাই। অন্যান্য উপাসনালয়গুলি বিক্ষিপ্তভাবে নির্মিত। যেগুলির কোন কেন্দ্র নাই। আর মসজিদের মত প্রতিদিন পাঁচবার বহুল ব্যবহৃত অন্য কোন উপাসনালয়ও গড়ে উঠেনি। 

মসজিদের সংখ্যা এবং এর সৌন্দর্যও অন্য ধর্মের কাছে ঈর্ষণীয়। সুউচ্চ মিনার এবং মিনার থেকে ভেসে আসা সুমধুর আযানের সৌন্দর্য এ যেন এক অনন্য আনুষ্ঠানিকতা। যা অন্য ধর্মে খুজে পাওয়া যায় না।

জীবন-মৃত্যুর সাংস্কৃতিক সৌন্দর্য


মানুষের জন্ম ও মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ইসলামের যে সংস্কৃতি সেটাও খুবই চমৎকার। মুসলিম পরিবারে একটি শিশু জন্ম নেয়ার পর তার কানে আযানের বাণী শোনানো হয়। তারপর সৃষ্টিকর্তার কাছে কৃতজ্ঞতা স্বরুপ তার জন্য একটা দুইটা বা আরো বেশি পশু জবাই করে অর্থাৎ আকিকা দিয়ে একটা অর্থবহ নাম রাখা হয়।

আকিকার গোস্ত পাড়া প্রতিবেশী, গরীব মিসকিনদের মাঝে বিতরণ করা হয় এবং বাড়িতেও আত্মীয়দেরকে দাওয়াত করে খাওয়ানো হয়। ছেলে শিশুর ক্ষেত্রে সুন্নাতে খাতনার সময়ও সামর্থ ও ইচ্ছা থাকলে সব ধরনের মানুষদেরকে দাওয়াত করে খাওয়ানোর যে সামাজিক সংস্কৃতি সেটাও কম সুন্দর নয়।

ইসলামী আইনে বিয়ের ব্যবস্থা খুবই সহজ ও যৌক্তিক। একজন নারীকে তার উপযুক্ত সম্মান ও অধিকার দিয়ে একজন পুরুষ বিয়ে করে তার ঘরে নিয়ে আসে। সে স্বামীর বাড়িতেও পূর্ণ স্বাধীনতা ভোগ করতে পারে। কোন কারনে একজন আরেকজনকে অপছন্দ করলে উভয়েই পৃথক হয়ে যেতে পারে। উভয়েই নতুন কাউকে বিয়ে করতে পারে। পুরুষরা প্রয়োজনে শর্ত সাপেক্ষে একাধিক বিয়েও করতে পারে। এভাবে একটা সুখি পরিবার গড়ে উঠে।

মৃত্যুর পর একজন মুসলিমকে মনের সকল আবেগ ও ভালবাসা দিয়ে যত্ন সহকারে গোসলের মাধ্যমে পাক পবিত্র করে সাদা কাপড়ে আবৃত করে আমরা কবরে দাফন করে থাকি। কারো মৃত্যুর পর একজন মুসলিম ভেঙ্গে পড়বেনা, হতাশ হবেনা বা মন খারাপ করে থাকবে না। ভাগ্যের এ নির্মমতাকে স্বাভাবিকভাবে গ্রহন করে নিবে। একজন মুসলিম তিন দিনের বেশি শোক পালন করবে না।

পৃথিবীতে যত কবর আছে সকল কবরগুলি একইভাবে কাবা ঘরকে কেন্দ্র করে খনন করা হয়। কবরে মৃত ব্যক্তিকে তার ডান পাশ কাবা ঘরের দিক করে শোয়ানো হয় অর্থাৎ কবরের প্রত্যেকটি লাশ কাবা ঘরকে কেন্দ্র করে কত সুন্দর শৃঙ্খল বিন্যাসে শুয়ে থাকে। এমন সুন্দর ব্যবস্থা আর কোন ধর্মে ভাবা যায়? কিছু ধর্মে লাশকে গর্ত খুড়ে চাপা মাটি দেয়া হয়। আবার লাশকে আগুনে পোড়ানোর মত নির্মম নিষ্ঠুরতাও আমরা দেখতে পাই।

ঘুমানোর ক্ষেত্রেও যদি কোন মুসলিম কাবা ঘরের দিকে মুখ করে ডান কাতে ঘুমায় তাহলে দেখা যাবে সারা পৃথিবীর সমস্ত ঘুমন্ত মানুষদের মধ্যেও একটা শৃঙ্খলা ফুটে উঠেছে। পৃথিবীর সকল ঘুমন্ত মানুষরা কাবা ঘরকে কেন্দ্র করে একইভাবে ঘুমিয়ে থাকার এই অদ্ভুত সৌন্দর্য কি অন্য ধর্মের লোকজন কল্পনা করেছে?

ব্যাক্তির সাথে ব্যাক্তির, ব্যাক্তির সাথে সমাজের এবং অন্যান্য ধর্মের মানুষের সাথে দৈনন্দিন যে সম্পর্কের মধ্যে আমরা বসবাস করি তা খুবই মজবুত ও মধুর। পৃথিবীর সকল মুসলমান ভাই ভাই। প্রতিবেশী, আত্মীয়স্বজন, বন্ধু-বান্ধব সকল মানুষের প্রতি দায়বদ্ধতাও অনেক। এভাবেই মুসলিম সমাজে শান্তি ও সৌন্দর্য ফুটে উঠে।

ইসলামে ব্যক্তিগত গোপন কিছু ইবাদত আছে যেটা শুধুমাত্র আল্লাহর সাথে সম্পর্কিত। আর বাকি ইবাদতগুলি সব মানুষ ও সমাজের সাথে সম্পর্কিত। একজন মুসলিম কখনো একা থাকতে পারে না। তাকে অবশ্যই মানুষ ও সমাজের কল্যাণের জন্য কাজ করতে হয়। আর এগুলিও ইবাদতের অতীব গুরুত্বপূর্ণ দিক।

বিশ্বব্যাপী অশ্লিলতা ও অবাধ মেলামেশা থেকে বাঁচার জন্য এবং পরিবার ও সমাজকে শান্তিময় করার জন্য একমাত্র উপায় ইসলামের পর্দা প্রথার আবশ্যকতা। এ ছাড়া ইসলামের অর্থব্যবস্থা, বিচার ব্যবস্থা, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় বিধান গুলি খুবই বাস্তব সম্মত ও কল্যাণকর। জীবনের সকল ক্ষেত্রে মানুষের অধিকতর কলাণ ও সমাজকে সুন্দর করে গড়ে তোলাই ইসলামের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।

যুদ্ধ-বিগ্রহ ও উদারতা


ইসলাম প্রতিষ্ঠা তথা মানুষের অধিকার ও মুক্তির জন্য এবং সমাজের অন্যায় ও অশান্তি দুর করার জন্য যুদ্ধের প্রয়োজন হলে যুদ্ধ করা। মুসলমানরা শুধুমাত্র আক্রান্ত হলেই তবে আক্রমণ করবে। ইসলামে যত যুদ্ধ হয়েছে সকল যুদ্ধে নিহতের সংখ্যা খুবই কম। মক্কা বিজয়ে কাফেরদের মাত্র বার জন আর মুসলমানদের দুই জন নিহত হয়।

অন্যান্য জাতির মধ্যে যে সকল যুদ্ধ হয়েছে সেখানে লক্ষ লক্ষ মানুষ মারা গেছে এবং নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করা হয়েছে। বন্দী করে বিষাক্ত গ্যাস দিয়ে এবং আগুন জালিয়ে মানুষকে হত্যা করা হয়েছে। ইসলামের যুদ্ধ নীতিতে এ ধরনের কোন অমানবিকতার উদাহরণ নাই। উদারতা আর ক্ষমায় ভরপুর।

কোরআনের সৌন্দর্য


এটা এমন একটা গ্রন্থ যাতে সন্দেহের কোন অবকাশ নাই। পৃথিবীতে মানব রচিত যত বই আছে সকল বইতে ভুল থাকতে পারে বলে অকপটে স্বীকার করে নেয়া হয়েছে। কোরআনের ছোট একটি সুরার মত একটি সুরা রচনা করার যে চ্যালেঞ্জ তা আজ পর্যন্ত কেউ গ্রহন করতে পারেনি। পৃথিবীর যে প্রান্ত থেকেই এই ঔশী গ্রন্থ সংগ্রহ করা হোক সকল গ্রন্থই এক ও অভিন্ন।

কোরআনের মত সর্বাধিক পঠিত ও মুখস্ত করে রাখার মত দ্বিতীয় কোন গ্রন্থ এই পৃথিবীতে নাই। কোরআন তেলাওয়াতের যে হৃদয়গ্রাহী মাধুর্য ও সৌন্দর্য তা অন্যান্য সকল ধর্মীয় গ্রন্থের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ অনুপস্থিত। মানুষ, সমাজ ও রাষ্ট্র পরিচালনার যাবতীয় মৌলিক দিক নির্দেশনা এই বইতে উল্ল্যেখ করা হয়েছে। কোরআন স্রষ্টার একত্বের এক মহিমান্বিত দৃষ্টান্ত।

মানব জাতির পথ প্রদর্শক মহামানব হযরত মুহাম্মদ সা. এর চারিত্রিক মাধুর্য আর সৌন্দর্য সকল ধর্মের মানুষদের কাছে অনুস্মরণীয়। মানবতা, অনুকম্পা ও সাম্যতার নবী আরোপ করেছেন আন্তর্জাতিক ঐক্য ভ্রাতৃত্বের আলোক বর্তিকা। মানুষের অবশ্যই উচিত তাঁর কথা শোনা এবং তদনুযায়ী কাজ করা। তাঁর কথার তুলনায় বাকী সব বাতাস তুল্য।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

অর্ডিনারি আইটির নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url